করোনায় আগামী ১৫ দিন সর্বোচ্চ সতর্ক হোন-এপে.নিজাম উদ্দিন পিন্টু জাতীয় সভাপতি এপেক্স বাংলাদেশ

প্রিয় এপেক্সিয়ানবৃন্দ,
আসসালামু আলাইকুম।
ঈদ মোবারক।
আশাকরি সকলের একটি মোটামুটি ভালো দিন কেটেছে।

কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারীর এই ক্রান্তিকালে
পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন, আমাদের জন্য যতটা না আনন্দের ছিলো, তারচেয়ে শতগুণ বেশি ছিল উদ্বেগ ও শংকার।

প্রতিদিনই মৃত্যর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে, সীমিত আকারে পিসিআর টেস্টের পরও করোনা শনাক্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। টেস্ট সংখ্যা বাড়ুক আর নাই বাড়ুক, মোটামুটি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক লাখ ছাড়িয়েছে তা সহজেই অনুমেয়।

কিন্তু এতকিছু ও সর্তকতা পরও আমাদের টনক নড়েনি; তার সাথে এসে যুক্ত হয়েছে আমাদের বহুল কাঙ্খিত পবিত্র ঈদ।
ঈদকে কেন্দ্র করে করোনা নিরাপত্তা বেষ্টনী একেবারে ভেঙ্গে গেছে বলা চলে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, সরকার ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হতে বারবার কঠোর সতর্কতা জারি করা হলেও আমরা কেউই এই সতর্ক বার্তা বিন্দুমাত্র পাত্তা দেইনি।

সবাই আরামসে ও দেদারসে একজায়গা হতে আরেক জায়গায় মুভমেন্ট করেছি।
শহর হতে গ্রামে,শহরের একপ্রান্ত হতে আরেক প্রান্তে, বাজারে,শপিংয়ে, পার্কে, একবাসা হতে আরেক বাসায়, রেডজোন হতে সেইফজোন সব একাকার হয়ে গেছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, অধিকাংশ মসজিদেও ঈদের জামাত আদায়ের সময় সরকারি নির্দেশনা মেনে নিরাপত্তা মেনটেইন করা হয়নি।

এই অবস্থায় করোনা ভাইরাস তার ভয়ংকর বিস্ফোরণের দ্বার প্রান্তে এসে দাড়িঁয়েছে।
কত সংখ্যক মানুষের মাঝে নতুন করে করনোর সংক্রমণ ঘটেছে তা আমরা কেউ ধারণা করতে পারছিনা।

আগামী ১৫/২০দিন হচ্ছে এই দেশের জন্য, আমাদের জন্য সবচেয়ে আতংকের ও করোনা ভাইরাস বিস্ফোরণের ভয়ংকর সময়।
এই সময় জনসাধারণের ব্যাপক মুভমেন্টের ফলে হাজার হাজার মানুষ নিশ্চিত সংক্রমিত হয়ে পড়েছে।

আমাদের মধ্যে যারাই সংক্রমিত হই না কেন, কারো লক্ষণ প্রকাশ পাক আর না-ই পাক ; সংক্রমিত হওয়ার প্রথম ৭২ঘন্টা আরো মারাত্মক। এই সময়টা হচ্ছে ‘ইনকিউবেশান পিরিওড’। ইনকিউবেশান পিরিয়ডের এই সময় একজন অসতর্ক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষ শত শত লোককে রোগাক্রান্ত করে ফেলতে পারে।

আর তাই আপনাদের কাছে সোজা-সাপ্টা অনুরোধ, আপনারা সকলে আগামী ১৫ দিনের জন্য একেবারে নিরাপদ স্থানে সরে যান।
নিজে নিরাপদ থাকুন, পরিবারকে নিরাপদ রাখুন।
এই কয়দিন দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করুন।
একজন এপেক্সিয়ান হিসেবে, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিজেদের, নিজের পরিবার,স্বজন ও প্রতিবেশীর বেচেঁ থাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

পরিষ্কার কথা – ধরে নিন, আপনি নিজেই করোনাক্রান্ত!
সেবা করতে গিয়ে, অন্যের উপকার করতে গিয়ে, কাউকে রোগাক্রান্ত করে খুন করে ফেলা বা ঐ পরিবারকে করোনা জটিলতা সংক্রান্ত ব্যয় বহুল চিকিৎসার জাঁতাকলে ফেলে নিঃস্ব করা যাবে না এবং নিজেরাও নিঃস্ব হওয়া যাবে না।

এইবারের ঈদেও করোনাক্রান্ত হাজারো রোগী ও তাদের লাখো লাখো স্বজনদের হাসপাতালে হাসপাতালে, বারান্দা হতে বারান্দায় এবং রাস্তায় রাস্তায় দিশেহারা হয়ে ঘুরতে হয়েছে, পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে নাযেহাল হতে হয়েছে।

প্রথম কথা নিজেরা সর্তক হোন, অন্তত ১৫ দিনের জন্য স্বার্থপর হোন। ইতোপূর্বে আমাদের দেশে হরতাল/অবরোধে ৪/৫ মাস টানা লক্ ডাউনেও মানুষ বেচেঁ ছিলো, টিকে ছিলো।
আপনি নিজে ও পরিবার বেচেঁ থাকলে, সুস্থ থাকলে, বহু মানুষ ও সমাজ আপনার কাছ হতে উপকার পাবে।
যারাঁ কর্মস্থলে যেতে বাধ্য তারাঁ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সতর্কতা নিশ্চিত করুন।
সকলে গ্লাভস্ ব্যবহার করুন, সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করলে ডাবল করে (২টা একত্রে) ব্যবহার করুন। বাজারের সব মাস্কও কিন্তু নিরাপদ নয়, এন-৯৫ মাস্ক দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা যায়না, এবং তাও আমাদের জন্য নয়। অন্যান্য মাস্কের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ধুয়ে মাস্ক ব্যবহার করবেন না।

নিজে বিপদগ্রস্ত হয়ে আপনার পরিবারকে বিপদে ফেলবেন না, নিজেদের পরিবার ধ্বংস করবেন না।

অন্যদের( স্বজন বা যাদের আগে উপকার করেছেন) ও নিজেদের সংগঠনকে পরীক্ষায় ফেলবেন না।
কে এগিয়ে এসেছে, না এসেছে তা যাচাই করতে চাইলেও, সুযোগও হয়তো পাবেননা।

ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন এপেক্সিয়ান ও তাদেঁর পরিবার রোগাক্রান্ত হয়ে গেছেন।
আপনারা বাসায় থাকুন, নিরাপদে থাকুন।

নিজ নিজ ক্লাবের সদস্যদের সাথে ফোনে, ম্যাসেঞ্জারে, ভিডিও কলে সংযুক্ত থাকুন, পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়ান, একে অপরকে উৎসাহ দিন।
——————————
বি.দ্র.
—–
এপেক্স ক্লাবগুলোর পালাবদল ও অন্যান্য এক্টিভিটি সম্পর্কে ৪/৫ দিনের মাঝে জাতীয়বোর্ডের সমন্বিত নির্দেশনা পেয়ে যাবেন।
জাতীয় সভাপতির ক্লাব, আপনাদের নিজ নিজ জেলা গভনর্রসহ প্রায় সকল জাতীয়বোর্ড সদস্যদের ক্লাবেরই পালাবদল সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
এই কঠিন সময়ে আরো কিছু নতুন নতুন সমস্যাও এপেক্সে সৃষ্টি হয়েছে।
আমরা জাতীয় বোর্ড সবকিছু ওয়াকিবহাল, আমাদের উপর আস্থা রাখুন, বিশ্বাস রাখুন।

আগে নিজেরা বেচেঁ থাকি, টিকে থাকি। রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধানের প্রতি লক্ষ্য রেখে আমাদের করণীয় গঠনতন্ত্রের আলোকে জানিয়ে দেয়া হবে।

ইতোমধ্যে আমরা এপেক্স বাংলাদেশের চার্টার্ড -আনচাটার্ড মিলিয়ে ১৪০টি ক্লাবের মধ্যে প্রায় প্রতিটি ক্লাব চমৎকার চমৎকার সার্ভিস করেছি, আর্তমানবতার সেবায় দাড়িঁয়েছি।
এপেক্সের ইতিহাসে এই পারফরমেন্সে আমরা খুশি; শীঘ্রই সার্ভিস সমূহের বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।

তবে হাতেগোনা যে কয়েকটি ক্লাব সার্ভিস করেনি, তাদের এপেক্স করতে হলে অবশ্যই সার্ভিস করতে হবে, সার্ভিস না করে কোন উপায় নাই, সবাই পারলে, উনাদেরও পারতে হবে।
আপনারা করোনা ফান্ড ও যাকাত ফান্ডে আপনাদের বাড়ানো হাত একটু সম্প্রসারিত করুন, এগিয়ে আসুন।
কয়েকদিনের মধ্যে প্রতিটি পয়সাসহ হিসেবের তালিকা প্রকাশ করা হবে।

আগামী ১৫ দিন সর্বোচ্চ সতর্ক হোন, ঘরে থাকি, নিজে নিরাপদ থাকি, অন্যকে নিরাপদ রাখি।

বিনীত

এপেক্সয়ান নিজাম উদ্দিন পিন্টু

জাতীয় সভাপতি
এপেক্স বাংলাদেশ
(আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন)

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*