আর্ন্তজাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এপেক্স বাংলাদেশ এর ১৪০টি চার্টাড-আনচাটার্ড ক্লাবের এপেক্সিয়ানদের সেবা প্রদান বিষয়ক কিছু কথা ঃ
বাংলাদেশ আজ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিপর্যয়ের মুখে।এই বিপর্যয়ের মেয়াদ আরো ১মাস হতে কয়েক মাস হতে পারে। আমরা অনেকেই করোনার ভয়াবহতা আচঁ করতে বা কল্পনাও করতে পারছিনা। সরকারি সিদ্ধান্তে হোম কোয়ারান্টাইন বা স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি বা জনবিচ্ছিন্ন থাকার অনুরোধ পাত্তা দিচ্ছেনা। এ অবস্থায় ক্লাবগুলো ব্যাপক সচেতনতা ও খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে। এপেক্সিয়ানদের প্রতি অনুরোধ হুলুস্থুল না করে ধীরে সুস্থে বিলি করতে হবে। খেয়াল করতে হবে যারা লাইনে এসে দাঁড়ায় যেমন ভিক্ষুক, রিকসাওয়ালা;এরা মোটামুটি চালু এজন্য একাধিকবার আদায় করতে পারে, সরকারি বা বেসরকারি তালিকায় বারবার নাম থাকে কিন্তু অনেক মানুষ আছে যারা মুখ ফুটে বলতে পারেনা, ঘরে পুরুষ মানুষ না থাকায়, শারীরিক সমস্যা বা বার্ধক্যের কারণে ঘর থেকে বাহিরে বা দূরে আসতে পারেনা কিন্তু খুব কষ্টে আছে এপেক্সিয়ানরা যেন তাদের খুঁজে এগুলো পৌঁছাতে পারে। এই ক্রাইসিস শুধু হতদরিদ্রদের জন্য নয় কিছুটা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার বা পাশের বাড়ির পরিবারটিও হতে পারে। তাদের পাশে সহায়তা নিয়ে দাড়াতে হবে।এছাড়াও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অনেকেরই টাকা আছে কিন্তু লোকবল নেই এই কঠিন সময়ে বয়স্ক হওয়ায় বা ভয়ে বেরিয়ে আসতে সাহস করেন না উনাদের নিজেদের টাকা দিয়ে দিয়ে উনাদের পাশে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দাড়িয়ে ঔষধ, বাজার করে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে,হট লাইন চালু করতে হবে,পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকায় বেশকিছু ডেডিকেটেড স্বেচ্ছাসেবক /স্বেচ্ছাসেবী স্থানীয় সংগঠন আছে তাদের সাথে যুথবদ্ধ হয়ে তাদেরও কাজে লাগানো যেতে পারে। দেখা যায় ঐসব স্বেচ্ছাসেবকদের আর্থিক সামর্থ্য কম,লজিস্টিক সাপোর্ট নাই কিন্ত ব্যাপক প্রাণশক্তি তাদের সাপোর্ট দিয়ে কাজে লাগাতে হবে। এই করোনা ক্রাইসিস কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদি ও মারাত্মক হতে পারে।খাদ্য সংকটও প্রকট হবে তাই এই মুহূর্তে হুলস্থুল করে সামনে যাকে পাই তাকে দিবো এই নীতিতে যাওয়া যাবেনা, সার্ভিস করতে হবে এই জন্য সার্ভিস করছি এই চিন্তা হতে বেড়িয়ে আসতে হবে নইলে সমূহ বিপদ।এতে নিজেদের মধ্যে হতাশা তৈরি হবে,সেবার আনন্দ আর তৃপ্তি পাওয়া যাবেনা ফলে আগ্রহ নষ্ট হবে। ভালো করে খেয়াল রাখতে হবে, কেউ কেউ দুঃস্থ হিসেবে ত্রাণ সংগ্রহ করে জমা করছে আর যৌক্তিক অনেকেই পাচ্ছে না। দুর্যোগকালীন সহায়তা দেয়ার সময় খেয়াল রাখতে আপনার একদম পাশের বেসরকারি স্কুল এর পিয়ন,শিক্ষক রিটায়ার্ড শিক্ষক-কর্মচারী যিনি পেনশন উঠিয়ে আনলেই বাজার করা সম্ভব, ব্যাংকে টাকা তুলতে যেতে না পারা সীমিত আয়ের মানুষ, মিডিয়া কর্মী, সংস্কৃতি কর্মী,পত্রিকার স্টাফ,বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাস্টাররোলে কাজ করা দৈনিক বেতনের কর্মী,বিনাবেতনে প্রতিষ্ঠান হতে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়ে দেয়া কর্মী এমনকি আপনার পাশের সেলুনের কর্মী,জুতা সেলাইওয়ালা, ছোট ছোট দোকানের কর্মচারী, প্রেসের কর্মচারী,বাইন্ডিং কর্মচারী, ফেরিওয়ালা,যারা মুখ ফুটে বলতে পারছে না কিন্তু তাদের পাশে দাড়ানো খুবই দরকার। নিজেদের প্রাথমিক বরাদ্দ শেষ হয়ে গেলে পারলে সরকারি-বেসরকারি সাহায্য ম্যানেজ করে দিতে হবে। নিজেদের সংগঠনের নাম ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে রাখতে হবে উনারা যেনো সামনাসামনি না বলতে পারলেও ফোনে হেল্প চাইতে পারে।তবে প্রতারক ও এডিক্টেট মানুষ থেকে সতর্ক থাকতে হবে, তারা যেনো আমাদের সেবা স্পৃহা নষ্ট না করে দেয়। বিভ্রান্তিতে পড়া যাবে না।মহানবী( সা.) সেবা- সহযোগিতা ও ভালো কাজ প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে করার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। সবসময় গ্রহীতার ছবি উঠানো যায়না এবং ঠিকও না কিন্তু আপনি যেসব পণ্য একত্রিত করে রেডি করছেন ব্যানারসহ সেসব পণ্যের ও নিজেদের গ্রুপ ছবিটা অন্যদের উৎসাহিত করবে, নিজেদের সংগঠনকে পরিচিত ও গ্রহণযোগ্য করে তোলার পাশাপাশি ক্লাব রিপোর্টকে সমৃদ্ধ ও প্রশ্নহীন করবে।এসব সাহায্য -সহযোগিতায় যদি কারো কন্ট্রিবিউশান থাকে তা অবশ্যই প্রকাশ করবেন। আর যারা নিজেরা সাহায্য সহযোগিতা করেনা, প্রপাগান্ডা,ফেৎনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যায়,আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা নিজেরা খরচ করেনা বা শারীরিক শ্রমও দেয় না কিন্তু ফটোসেশান এর জন্য দাঁড়িয়ে যায় তাদেরকে কোন অবস্থায়ই এলাও করবেননা ; তিনি যে-ই হোকনা কেন, তিনি/উনারা সবসময়ই নির্লজ্জ হতে পারলে আপনি/আপনারা কেন সংঠনের স্বার্থে দৃঢ় হতে পারবেন না। ক্রিয়েটিভ মানুষ নেগেটিভ হলে সবাই দূরে থাকবেন এবং রাখবেন;আল্লাহ পাক স্বয়ং কৃপণ ও নেতিবাচক -পরশ্রীকাতর,নিন্দুক অপছন্দ করেন, সেখানে আল্লাহর বান্দা হিসেবে পছন্দ করে গুণাহ করার দরকার নাই। সবশেষে খেয়াল রাখবেন করোনা ভাইরাস মারাত্মক ও স্পর্শ কাতর রোগ,আমাদের দেশে নিরবে নিভৃতে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়েছে, এমনকি আমরা অনেকে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছি, অনেকেই বাহকও হতে পারি তাই খেয়াল করে সতর্ক, প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও নিরাপদ দুরত্ব রাখতে হবে যাতে গ্রহীতা হতে আমার না ছড়ায় আবার ত্রাণ দিতে গিয়ে তার বাড়িতে উল্টো বাড়তি মরণ উপহার করোনা ভাইরাস না দিয়ে আসি। আপনাদের কাছে অনেক চমৎকার আইডিয়া আছে, দ্বিধাহীন চিত্তে আপনাদের আইডিয়া ও পরামর্শ আমরা জাতীয় বোর্ড আশা করছি যাতে সীমিত সামর্থের মাঝেও এপেক্স বাংলাদেশ সেই মতে এগিয়ে যেতে পারে,উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। পজিটিভ পরামর্শগুলো আমাদের ম্যাসেঞ্জারে দেন, গ্রুপ ম্যাসেঞ্জারে আলোচনা/ সমালোচনা করুন; কিন্তু ফেইসবুকে ওপেন/পাবলিকলি দেয়া কোনো মতেই উচিত না, সেখানে সবারই অন্য ঘরানার বন্ধুরা আছে যারা এপেক্স সম্পর্কে, আমাদের সম্পর্কে বিভ্রান্ত হবেন, আমাদের চিন্তা -চেতনা, আদর্শ, রুচি ও সংগঠন সম্পর্কে খুবই বাজে ধারণা সৃষ্টি হলে নতুন সদস্য প্রাপ্তিতে খুবই সমস্যা হবে, সংগঠন ক্ষতিগ্রস্থ হবে।আল্লাহ সবাইকে সেবা করার তৌফিক দেন।আমিন।
বিনীত
এপেক্সিয়ান নিজাম উদ্দিন পিন্টু
জাতীয় সভাপতি
এপেক্স বাংলাদেশ
( আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন)
Leave a Reply